ফেসবুক মার্কেটিং বর্তমান সময়ের ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ফেসবুক ব্যবহার করে কোনো কোম্পানির পণ্য বা সেবাকে গ্রাহকরের কাছে পৌঁছে দেয়া অথবা কোম্পানির ব্র্যান্ডিং ও ভিজিবিলিটি বৃদ্ধি করাই হচ্ছে ফেসবুক মার্কেটিং।
শহর থেকে শুরু করে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটে ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এখন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনের বেশিরভাগ সময় কাটায়। এসব সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে সবথেকে বহুল ব্যবহৃত ফেসবুক। তাই পণ্যের ডিজিটাল প্রচারণাকে আরো জোরদার করার জন্য ফেসবুক কেন্দ্রিক যে মার্কেটিং পরিচালনা করা হয়, তাই মূলত ফেসবুক মার্কেটিং।
ফেসবুক মার্কেটিং এ সাধারণত কোন পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন তৈরি করে সেটিকে সম্ভাব্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। ফেসবুকের অ্যাডভান্সড সব ফিচারের কল্যাণে ফেসবুক মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ। এ ব্যবস্থায় একজন মার্কেটার তার পণ্য কিনতে সর্বাধিক আগ্রহী এমন সব গ্রাহককে সহজেই খুঁজে নিতে পারে।
ফেসবুক মার্কেটিং কত প্রকার?
ফেসবুক মার্কেটিং সাধারণত ২ প্রকারে হয়ে থাকে। আর তা হলো ফ্রি ফেসবুক মার্কের্টিং এবং পেইড ফেসবুক মার্কের্টিং। ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী ফ্রি এবং পেইড ফেসবুক মার্কের্টিং ব্যবহার করা হয়।
ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং
আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলে সেই পেজের মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের পন্য প্রচার করাই হচ্ছে ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং। আপনার ফেসবুক পেজে প্রচুর পরিমানে ফ্যান ফলোয়ার থাকলে খুব সহজে আপনি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন।
তাছাড়া আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করেও আপনার পন্যের প্রচার ঘটাতে পারেন। এ ছাড়াও ফেসবুক প্রোফাইল ও ফেসবুক ম্যাসেজঞ্জার দিয়ে আপনি ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারবেন। সাধারণত ছোট খাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং করে থাকে।
পেইড ফেসবুক মার্কেটিং
টাকার বিনিময় ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তাকেই ফেসবুক পেইড মার্কেটিং বলে। যে কোন ধরণের বিজ্ঞাপন ফেসবুকে টাকার মাধ্যমে দেয়া যায়। এ ধরণের বিজ্ঞাপন সাধারণত ফেসবুক নিউজফিডে বিভিন্ন পন্যের স্পন্সরড পোষ্ট হিসেবে শো হয় এবং ফেসবুক এর ডান পাশে বিভিন্ন পন্যের ছবি বা অফার আকারে শো হয়।
ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার একটি ফেসবুক পেজ থাকতে হবে। ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া যায় না। সে জন্য প্রথমে আপনার কোম্পানির নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিতে হবে। তারপর ফেসবুক পেজে আপনার পন্যের বিস্তারিত তথ্য সংযোজন করে আপনার পন্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
ফেসবুকের জনপ্রিয়তা
সারাবিশ্বে প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ প্রতিমাসে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধু ফেসবুকই ব্যবহার করেন আনুমানিক ২.৯১ বিলিয়ন মানুষ। আর এর মধ্যে অন্তত ২.৩ বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন ফেসবুকে লগিন করে থাকেন।
অপরদিকে প্রতিদিন ফেসবুকে ছবি আপলোড করা হয় প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন। যা সত্যিই বেশ অবিশ্বাস্য। প্রতি মিনিটে জনপ্রিয় এই প্লাটফরমে ৫,১০,০০০ টি কমেন্ট, ২,৯৩,০০০ টি স্ট্যাটাস এবং ১,৩৬,০০০ টি ছবি আপলোড হয়ে থাকে। তাহলে খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা ঠিক কতখানি।
ফেসবুক মার্কেটিং কেন করবেন?
আমি ইতিমধ্যে পরিসংখ্যানের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছি এটা কত বড় মার্কেটপ্লেস হতে পারে আপনার জন্য। এত এত এক্টিভ ইউজার আপনি আর কোথায় এত সহজে ফ্রিতে পাবেন? বাংলাদেশের ১৬ থেকে ৩০ বয়সী লোকজনের প্রায় ৮০% লোক ফেসদবুকে নিয়মিত এক ঘন্টা সময় ব্যয় করে।
বাংলাদেশের দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০% এর বেশি লোক ফেসবুক ব্যবহার করেন। বুঝতেই পারছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশেই আপনি লক্ষ লক্ষ ইউজার পেয়ে যাচ্ছেন অতি সহজে, যারা আপনার সম্ভাব্য ক্রেতা হতে পারে।
- ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি আপনার নিজস্ব ব্লগ, ওয়েবসাইটের ট্রাফিক-ও বাড়াতে পারেন।
- আপনি যেকোন শহর, দেশ, বয়েস, লিঙ্গ হিসেবে সার্চ করেও আপনার কাস্টোমার এখানে টার্গেট করতে পারবেন।
- অনান্য মার্কেটিং এর তুলনায় এটি খুব দ্রুত কার্যকরী ও খরচ কম।
- খুব অল্প সময়েই আপনি আপনার পেজ বা কোম্পানির ব্রান্ডিং করতে পারবেন এখানে।
- খুব সহজে কাঙ্খিত গ্রাহক খুঁজে পাওয়া যায়।
- আপনার পেজ, গ্রুপ, আইডিতে অধিক ফলোয়ার থাকার মানে হচ্ছে আপনার গ্রাহক পাওয়ার চান্স অনেক বেশি। আর এই ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার এত সহজে অন্য কোন সোশ্যাল প্লাটফর্মে পাওয়া সম্ভব নয়।
এখানে চেষ্টা করেছি, “ফেসবুক মার্কেটিং কি এবং কেন প্রয়োজন” তার বিস্তারিত জানাতে।
ধন্যবাদ
Rajib Kumar Bormon
CBT & A Certified Digital Marketer
Facebook Authorization Ad Sales Partner
Mentor of Shikhbe Shobai
Leave a Reply